ভোলার বিচ্ছিন্ন চর মদরপুর ১০ হাজার
মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত
কামরুন নাহার শিলা, ভোলা।
ভোলার দৌলতখানের চর মদরপুর ইউনিয়নে ১০ হাজার মানুষ বসবাস করলেও স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত তারা। একটি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও সেখানে নেই ডাক্তার। তবে বেসরকারি এনজিওর সহযোগিতায় একজন কলেজ ছাত্রী মাসে এক বার ইউনিয়নবাসীকে ১০ টাকার বিনিময় ঔষধ দিলেও দিতে পারছেন না চিকিৎসা। ফলে চিকিৎসার জন্য হাজার হাজার টাকা খরচে ট্রলার ভাড়া করে যেতে হয় হাসপাতালে। অনেক সময় পথে মারা যায় প্রসুতি মা। তবে চর মদনপুর ইউনিয়নের মানুষের কথা চিন্ত করে জরুরি একটি নৌ এ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে। শিগ্রই ১০ শ্যার্যার একটি হাসপাতাল স্থাপনের প্রতিশ্রিুতি দিয়েছেন ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মকুল। ভোলার দৌলতখান উপজেলার চর মদনপুর ইউনিয়নটি ১৯৮০ সালের দিকে মেঘনা নদীর ভাঙনের কারণে বিলীন হয়ে যায়। ১৯৯৪ সালের দিকে আবার জেগে উঠে। এপর ২০০১ সাল থেকে নদীতে ঘর-বাড়ি ও জমি-জমা হারানো হাজার হাজার মানুষ ওই চরে বাসবাস শুরু করে। বর্তামানে ১৬ বর্গ মাইল নিয়ে এ ইউনিয়ন। এখানে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করছেন। এখানকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস্য কৃষি ও মৎস্য শিকার।
এতো মানুষের বসবাস থাকলেও আজও এখানে গড়ে উঠেনি কোন হাসপাতাল। ফলে প্রতিনিয়ত মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গ্রামের হাতুরে ডাক্তার দিয়ে চরে তাদের স্বাস্থ্য সেবা। কয়েক বছর আগে একটি ক্লিনিক গড়ে উঠলেও দেয়া হয়নি কোন চিকিৎসক। কারিতাস নামের একটি বেসকারি উন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকে প্রতি মাসে একবার ওই ক্লিনিকে একজন কলেজ ছাত্রী ১০ টাকার বিনিময়ে সর্দি কাশির মত সাধারণ রোগের ঔষধ দিয়ে থাকে। ফলে বড় ধরনের কোর রোগ বালাইতে পড়লে চরবাসীকে চিকিৎসার নেয়ার জন্য দৌলতখান বা ভোলা সদর হাসপাতালে যেতে হয়। উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে যাওয়া দুরুহ হয়ে পড়ে। তা ছাড়া বাড়তি টাকার প্রশ্নতো থেকেই যায়। এতে গরীব মানুষের মধ্যে অনেকটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। অনেক সময় প্রসূতি মায়েদের হাসপাতালে নিতে দেরি হলে চরে কিংবা হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যায়। এদিকে এ চরে মানুষের চিকিৎসার প্রদানের জন্য হাসপাতাল ও ডাক্তারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয় এ ইউপি সদস্য। তবে চর মদনপুরের মানুষের কথা চিন্তা করে একটি নৌ এ্যাম্ভুলেন্স দিয়েছেন এবং এ ইউনিয়নের মানুষ যাতে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য ১০ শ্যয্যার একটি হাসপাতাল স্থাপন করা হবে বলে জানান স্থানীয় এ সংসদ সদস্য। ‘গ্রাম হবে শহর’ প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষে ভোলার বিচ্ছিন্ন চরমদনপুরবাসীর দাবী অতি দ্রুত তাদের নূন্যতম স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।