বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে সার্জারী বিভাগের চিকিৎসককে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করায় তৌহিদ নামে রোগীর স্বজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে ইন্টার্নী চিকিৎসকরা। গত সোমবার (০৭ আগস্ট) দিবাগত রাত সোয়া ৩ টায় পুলিশ তৌহিদকে থানায় নিয়ে যায়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত বরিশাল সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা জাহিদ সরদারকে পঞ্চম তলায় অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। এসময় রোগীর সাথে আসা স্বজনদের অপারেশন থিয়েটারের সামনে ভীর না করে তাদের দূরে অবস্থান করতে বলা হয়।
কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত করে চলছিলো। কিছু সময় পর অপারেশন থিয়েটারে থাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে যায় এবং সেখানে রাখা ব্যাগ ও মোবাইল দেখতে না পেয়ে সার্জারী বিভাগের রেজিষ্টার ডা. সাইফুল আজমকে অবহিত করে।
চিকিৎসক সাইফুল রোগীর স্বজনদের মোবাইল ও ব্যাগ না পাওয়ার বিষয়টি জানান এবং তাদের অপারেশন থিয়েটার এলাকা ত্যাগ করতে পুনরায় অনুরোধ জানান। কিন্তু এরমধ্যে রোগীর স্বজনরা তাদের চোর বলা হয়েছে বলে দাবি করে ওই চিকিৎসককে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
আরিফুল ইসলাম নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার কিছু সময়ের মধ্যেই একদল যুবক (ইন্টার্ন ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী) এসে রোগীর স্বজনদের খুঁজতে থাকেন। এসময় তৌহিদ ও শামীম নামে রোগীর ২ স্বজনকে মারধর করে এবং পঞ্চম তলার সার্জারী ওয়ার্ডের চিকিৎসকদের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে।
ওই সময় পঞ্চম তলায় রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে পুলিশের ওপর চড়াও হয় বিক্ষুদ্ধ চিকিৎসকরা। পরবর্তীতে সিনিয়র চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নেতাদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।”
শেবাচিম হাসপাতালের ইন্টার্ন ডক্টরস্ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. রাজু আহমেদ জানান, চিকিৎসক লাঞ্চিতের খবর পেয়ে সাধারন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ঘটনাস্থলে আসেন। উপস্থিত সবাই ক্ষুদ্ধ হলে পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়। পরে তৌহিদ নামে এক স্বজনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় পাশাপাশি ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে শামীম নামে এক স্বজনকে ছেড়ে দেয়া হয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ্ মো. আওলাদ হোসেন মামুন জানান, সরকারী কাজে বাঁধা ও চিকিৎসক লাঞ্ছিতের ঘটনায় চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি তারা রোগীর এক স্বজনকে পুলিশের হাতে সোপার্দ করেছে। পুরো বিষয়টি আরও পর্যালোচনা করে উভয়পক্ষের অভিযোগ শুনে আইনগত পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”