জসিম রানা, ভোলা।
ভোলার দৌলতখান থানার সামনে দিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে জাহাজ থেকে প্রতিনিয়ত পেট্রোল, ডিজেল, সয়াবিন তেল, চিনি, ডালসহ বিভিন্ন মালামাল কালোবাজারীর মাধ্যমে কেনাবেচা চলছেই। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র দীর্ঘ দিন ধরে এ কালোবাজারী ব্যবসা চালিয়ে আসলেও থানা পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা০েগছে, দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলার রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় বীর-দর্পে কালোবাজারী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে হাই সিন্ডিকেটের সদস্যরা। পুলিশ ও প্রভাবশালী আবদুল হাইগংদের ভয়ে নাম ও ছবি প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ কর্মীদের ক্যামারার সামনে অনেকেই জানান, দৌলতখান উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আবদুল হাই ও তার ভাই জাকিরের নেতৃত্বে কামাল, হাদিস, মহিউদ্দিন, মনির, মন্নান হাজারী, হারু হাওলাদার, হারুন সিকদারসহ একটি সঙ্গবন্ধ চক্র দৌলতখান থানার সামনে দিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে বৃদ্ধাআঙ্গুলী দেখিয়ে দীর্ঘ এক যুগের বেশী সময় ধরে এসব অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে প্রতিনিয়ত সরকার বড় অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা আরো জানান, নদীতে ভাটা জোয়ারের সাথে সমন্বয় করে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জাহাজ দৌলতখানের চৌকি ঘাট পয়েন্টের মেঘনার মাঝ নদীতে নোঙর করে। গভীর রাতে জাহাজ থেকে ট্রলার যোগে এসব মালামাল স্থানীয় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট দৌলতখান থানার সামনে দিয়ে দৌলতখান বাজারসহ ভোলার বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকে। তারা আরো জানান, এসময় ওসি বজলার রহমান এর নির্দেশে একদল সহকারি পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) পাহারা দিয়ে থাকেন তাদের। এর বিনিময়ে ব্যারেল প্রতি পাঁচ থেকে সাতশত টাকা করে ওসি বজলার রহমানকে পুুুলিশ সদস্যরা বুঝিয়ে দেন। ওই টাকা ওসি বজলার রহমানের কাছে দিলে তিনি দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের মাঝে প্রতি মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা করে বন্টন করে থাকেন। আর তিনি পান সিন্ডিকেটের গড ফাদারের কাছ থেকে মোটা অংকের একটি অংশ। এ আলোচিত ঘটনাটি যমুনা টিভিসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে চোরাইকারবারীরা নতুন কৌশলে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে পুলিশ লোকদেখানো দু-একটি তেলের ব্যারেল আটক করলেও আবার গোপনে ছেড়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ পুলিশকে তথ্য দিলে তারা জানায়, এখন আর কালোবাজারী চলছে না ওই ঘাটে। ভোলার সচেতন মহল জানান, দৌলতখানের চোরাকারবারীর ঘটনা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। মধ্য রাতে মেঘনা পাড়ে দাড়ালেই যে কোন লোক এ দৃশ্য দেখতে পাবে। দেশের এত বড় বড় ক্রাইম বন্ধ হয়ে থাকলেও কেন যে দৌলতখানের এ কালোবাজারী বন্ধ হয়না তা অমাদের মাথায় আসে না।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবদুল হাইর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে দৌলতখান থানার ওসি বজলার রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মাঝে মধ্যে চোরাকারবারির খবর পেলে অভিযান চালিয়ে আটক করে মামলা করা হয়। কোন ভাবেই তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না।